দশমিনা (পটুয়াখালী) থেকে সঞ্জয় ব্যানার্জী
পটুয়াখালীর দশমিনায় শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন রোপা আমন ধান চাষিরা। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে এই অঞ্চলের কৃষকরা রোপা আমন ধান চাষ করেন। তবে আষাঢ় মাস শেষ হলেও মেলেনি ভারী বর্ষণের, তবে এখন শেষ মুহূর্তে ভারি বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে পুরোদমে আমন রোপনে মাঠে নেমেছে চাষিরা। দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে তারা।
দম ফেলার সময় টুকুু যেন নেই তাদের। আমন মৌসুম শুরু হলেও বৃষ্টির পানির অভাবে মাঠে নামতে পারেনি শুরুতে। শ্রাবণের প্রথম দিক থেকে রোপা আমন ধানের চাষ শুরু হলেও এ বছর মৌসুমের শুরুর দিকে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ধান চাষের পূর্বপুস্তুতি হিসেবে বীজতলা তৈরি করতে পরেনি এই উপজেলার আমন চাষিরা। ফলে এবছর রোপা আমন চাষে অনেকটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলার চাষিরা।
উপজেলা কৃৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দশমিনা উপজেলায় চলতি বছর রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ২১০ হেক্টর নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৪৮ হেক্টর বেশি। চলতি বছর শুরুতে বৃষ্টি কম থাকার কারণে আমন রোপণে কৃষক মঠে নামতে পারেনি।
সরেজমিনে গত সোমবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, দেরি হলেও মাঠজুড়ে চলছে রোপা আমন ধান রোপাণের প্রতিযোগিতা।
শতব্যস্ত দেখেও কয়েকজন চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাক্সিক্ষত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় রোপা আমন ধান চাষ নিয়ে হতাশায় রয়েছেন এই উপজেলার কিছু চাষিরা। চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান চাষের খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণের চেয়ে বেশি হওয়ায় অনেক কৃষকই তাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রোপা আমন ধান চাষ করতে পারছেন না।
উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামের কৃষক নশা মিয়া, ইউনুছ তালুকদার এবং উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দাসপাড়া গ্রামের আমন চাষি সংকর চন্দ্র, মজিদ হাওলাদার, জামাল হাওলাদার, জামাল মৃধা ও আলাউদ্দিন হাওলাদার এ প্রতিনিধিকে জানান, এবছর সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ধানের চাষের খরচ গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। যদি শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে না থাকে তবে এবছর আমন চাষিদের লোকসন গুণতে হবে।
বৃষ্টির পানির অভাবে খালে গোনে পানি উঠাইয়া বীজতলা বানাইছে। আর শেষ মুহূর্তে বর্ষা ও জোয়ারের পানিতে উপজেলার চারদিকে পানিতে টয়টম্বুর। উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে আমন রোপণের কাজ। দেখা মিলছে দল বেঁধে চারা লাগানোর চিত্র। উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের বড়গোপালদী গ্রামের কৃষক আবু ইউসুফ ও ভূবন চন্দ্র শীল বলেন, শেষ মুহূর্তে রোপা আমন রোপণে আমরা এখন পুরোপুরি ব্যস্ত। বর্তমানে জমিতে যথেষ্ট পরিমান পানি আছে আর চারা লাগাতে বেশ স্বাচ্ছন্দ পাচ্ছি আমরা।
এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাফর আহমেদ বলেন, ধান রোপণে দেরি হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর উপজেলায় ধান চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তিনি আরও বলেন, চাষিদের নিয়মিত সার, ওষুধ এবং কীটনাশক প্রয়োগে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
